বিদেশ ডেস্ক :

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পর এবার গো-রক্ষকদের দাপট নিয়ে সরব হল মোদী সরকারেরই শরিক শিবসেনা। শিবসেনার বক্তব্য, গো-রক্ষার নামে মানুষ পেটানো হিন্দুত্বের বিরোধী। মঙ্গলবার সেনার মুখপত্র ‘সামনা’র সম্পাদকীয়তে এ কথা জানানোর পাশাপাশি গো-মাংস নিয়ে একটি জাতীয় নীতি পেশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আর্জি জানিয়েছে শিবসেনা।
সাম্প্রতিক কালে উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা-সহ বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে গো-রক্ষার নামে হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে চরম হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। কোথাও বা গোমাংস খাওয়ার ‘অপরাধ’-এ পিটিয়ে খুন করার মতো ঘটনা ঘটেছে। কট্টরপন্থীদের রোষের বলি হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের দাদরির মহম্মদ আখলাখ থেকে শুরু করে হরিয়ানার কিশোর জুনেইদ খান বা ঝাড়খণ্ডের আসগর আনসারি। এ নিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ। মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন দেশের বহু বিদ্বজ্জন-সহ বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে #নটইনমাইনেম-এর মতো অভিনব প্রতিবাদ।

পথে নেমেছে নাগরিক সমাজ। গোটা বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন চুপ করে থাকলেও অবশেষে গত ২৯ জুন এ নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত সপ্তাহে তিনি বলেন, “গো-রক্ষার নামে মানুষ খুন বরদাস্ত করা হবে না।” নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার কারও অধিকার নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দেরিতে হলেও প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রশংসা করেছে শিবসেনা। শিবসেনার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে পদক্ষেপ করেছেন তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। গো-রক্ষার নামে কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। মানুষ পেটানো হিন্দুত্বের বিরোধী। হিন্দুত্বের সংজ্ঞা স্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা করার জন্যও নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ।’ এর পাশাপাশি ‘সামনা’র সম্পাদকের দাবি, ‘এ বিষয়ে উত্তেজনা কমাতে গো-মাংস নিয়ে একটি জাতীয় নীতিও তৈরি করা উচিত তাঁর।’
‘সামনা’য় আরও লেখা হয়েছে, ‘খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে ব্যবসায়িক কারণ বা রুজি-রোজগারের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। যাঁরা গো-রক্ষা করছিলেন গত কাল পর্যন্তও তাঁরা হিন্দু ছিলেন। আজ তাঁরাই হত্যাকারীতে পরিণত হয়েছেন।’

– সুত্র : আনন্দবাজার